রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

খোকা খুকুর মেলা (মেলা,গ্রাম্য মেলা)

খোকা খুকুর মেলা
-এইচ আর রাসেল
ছবি-প্রিন্টারেস্ট.কম

আজকে ওরা বেজায় খুশি,
ঘুরতে যাবে মেলায়
নানান রকম খেলনা কিনে
চড়বে নাগরদোলায়\
খুকুর চাই মাটির পুতুল
আলতা চুড়ি ফিতা
কানের দুল আর চেইন না হলে
মেলায় যাওয়াই বৃথা!
খোকার চাই খেলনা হরেক
আরও যে  ঢোল বাঁশি
বায়োস্কোপ আর পুতুল নাচও
দেখবে পাশাপাশি।
ঘুরে ঘুরে দিন হলো পার
ক্লান্ত যে কেউ হয় না
বলছে খোকা এমন মেলা
রোজই কেন হয় না?

পরিবারের ছড়া (পরিবার কাকে বলে)


পরিবার
-এইচ আর রাসেল


মা-বাবা ভাই-বোন সকলেতে মিলে

একসাথে থাকাকেই পরিবার বলে।

পরিবারে আরও থাকে দাদা আর দাদী

সুখে দুখে একসাথে হাসি আর কাঁদি।

পরিবারে বড়দের করি সম্মান

ছোটদের তরে আছে স্নেহ ভরা টান ।

পরিবার আমাদের কত না আপন

ভালোবাসা ঘেরা এক মায়ার বাঁধন।

বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০

বঙ্গবন্ধূ ও বাংলাদেশ (বঙ্গবন্ধূর বাংলাদেশ,বঙ্গবন্ধু)


বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

-এইচ আর রাসেল

ভূমিকা : পৃথিবীতে কিছু ক্ষণজন্মা মানুষের জন্ম হয় যারা তাদের কর্ম দিয়ে এ সমাজকে, জাতিকে আলোকিত করেন। মানুষ তাদের ভালোবেসে হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই দেয় আর আমৃত্যু শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করে। এ দেশে তেমনি একজন ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে। যার নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। যার হাত ধরে পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার মানুষ ভালোবেসে তার নাম দিয়েছে বঙ্গবন্ধু। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একটি অবিচ্ছেদ্য নাম। একটি ছাড়া আরেকটি যেন অর্থহীন।

জন্ম ও শৈশবকাল : বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার (পূর্বের ফরিদপুর) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মায়ের নাম সায়েরা খাতুন। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান তৃতীয়। ছোট বেলায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত চটপটে স্বভাবের। খেলাধুলা ও দিনভর ঘুরে বেড়ানো ছিল তার শৈশবের নিত্যকর্ম। খালে-বিলে সাঁতরে বেড়াতে তার ভালো লাগত। ফুটবল খুব ভালো খেলতেন তাই স্থানীয় ফুটবল দলে ছিল তার শক্ত অবস্থান। ছোটবেলায় তার নাম ছিল খোকা। আপনজনেরা ভালোবেসে তাকে এ নামে ডাকতেন ।

কৈশোরে বঙ্গবন্ধু: কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংগঠনিক দক্ষতা ও নৈতৃত্বের প্রমাণ রাখেন। ১৯৩৮ সালে তার বয়স যখন মাত্র ১৮ তখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ও তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী  গোপালগঞ্জ মহকুমা পরিদর্শনে আসেন। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল পরিদর্শন শেষে চলে যাওয়ার সময় অত্র স্কুলের ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান তাদের পথ আগলে দাঁড়ান। তারপর তার স্কুলের ভাঙ্গা ছাদ বেয়ে পানি পড়া, খেলার মাঠের দূরাবস্থা, জরাজীর্ণ ছাত্রাবাস, ব্যায়ামাগার সংকট, পাঠাগারে পর্যাপ্ত বই সংকট সহ অন্যান্য অসুবিধার কথা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তার স্পষ্ট ভাষণ এবং সৎসাহস দেখে তারা খুশি হন এবং তৎক্ষণাৎ এসব সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন।

ছাত্র জীবনে বঙ্গবন্ধু : গোপালগঞ্জের গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সাত বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্র জীবন শুরু হয়। তারপর গোপালগঞ্জ মিশন হাই স্কুল থেকে ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৬ সালে বিএ পাশ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আইন বিষয়ে পড়া শোনা করেন।

বর্ণীল রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু : তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় ১৯৪০ সাল থেকেই। তৎকালীন সময় তিনি ছিলেন গোপালগঞ্জ মহকুমা মুসলিম লীগের সম্পাদক এবং নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের কাউন্সিলর। ১৯৪৮ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলা’র দাবিতে গঠিত ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’-এর তিনি ছিলেন অন্যতম সদস্য। এ বছরেরই ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষার দাবিতে হরতাল পালনের সময় তিনি গ্রেফতার হন। জেলে বসেই তিনি বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আন্দোলনের অগ্রযাত্রায় গতি সঞ্চার করেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম গঠিত হলে তিনি সে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে তিনি ১৯৫৩ সালে একই দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচতি হন। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্টের হয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং জয়লাভ করেন। একইসাথে তিনি যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রীপরিষদের মন্ত্রীত্বও লাভ করেন। ১৯৬৬ সাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ বছর তিনি তার ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন। যাকে বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই ছয়দফার উপর ভিত্তি করেই বাঙ্গালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যায়। এই ছয় দফার জনপ্রিয়তায় ভিত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামী করে দেওয়া হয় আগরতলা ষরযন্ত্র মামলা। বার বার  গ্রেফতার করা হয় তাকে। কিন্তু জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি সরকার এ মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। বঙ্গবন্ধু মুক্ত হন। তার পরদিন ২৩ ফেব্রæয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করে। সেদিন রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলাকে বাংলাদেশ নামকরণে ভূষিত করেন।

১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের আপামর জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে দেন। সেই নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের মোট ১৬৯টি আসনের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। সেই সাথে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গণমানুষের একচেটিয়া সমর্থন পেলেও পশ্চিম পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকে। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলে দেশের মানুষ স্বাধীনতার নেশায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। যা ৭ই মার্চের ভাষণ নামে পরিচিত। একদিকে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের রক্তচক্ষু আর অন্যদিকে স্বাধীনতাকামী উত্তাল জনতা। সেদিন প্রায় দশ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সুকৌশলী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ভাষণ দিলেন। তার দরাজ কণ্ঠে ধ্বনিত হলো তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রæর মোকাবিলা করতে হবে... এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। উপস্থিত জনতা সেদিন বুঝে নিলেন আর সময় নেই এবার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার পালা। তখন থেকেই কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের উপর বঙ্গবন্ধুর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুও তার বিভিন্ন ভাষণে পূর্ব পাকিস্তান না বলে বাংলাদেশ উচ্চারণ করতে থাকেন। ২৩ মার্চ ভোরে বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে তার বাসভবনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন।

২৫ মার্চ কালরাত। বাঙালির জীবনে সবচেয়ে বেদনাদায়ক রাত। সেদিন রাত ১১টা ৩০মিনিটের দিকে পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাতের আঁধারে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। চালায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ আর অগ্নিসংযোগ। ঢাকার রাজপথে শুধু রক্ত আর রক্ত! হামলার কিছুক্ষণ পরই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার সেই ঘোষণা ওয়ারলেস, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। (সূত্র : বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ দলিলপত্র ৩য় খন্ড, প্রথম পাতা) সেই রাতে আরও একবার বঙ্গবন্ধু দেশবাসীর উদ্দেশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণাটি বিশেষ ব্যবস্থায় সারাদেশে প্রচার করা হয়। রাত ১.৩০ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২নং বাসা থেকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে।

মুজিবনগর সরকার ও বঙ্গবন্ধু : যুদ্ধকে সুচারুরূপে পরিচালনা করার জন্য ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। এই সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেকটি সেক্টরে কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। যুদ্ধের কলাকৌশল থেকে শুরু করে তাৎক্ষণিক সব দিকনির্দেশনা এই সরকার প্রদান করে। পাকিস্তান কারাগারে বন্দী থাকলেও বঙ্গবন্ধুই ছিলেন এই সরকারের মূল চালিকাশক্তি।

অতঃপর বিজয় : বঙ্গবন্ধুর ডাকে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি বীরের মতো যুদ্ধ করে। অবশেষে আসে সেই কাঙ্খিত বিজয়। ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। বাঙালির স্বপ্ন পূরণের দিন। দীর্ঘ নয়মাস রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের পর হানাদার বাহিনী সেদিন তাদের কমবেশি ৯০ হাজার সৈন্যসহ আত্মসমর্পণ করে। ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণ আর ২ লক্ষ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পাই স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে সদর্পে জায়গা করে নেয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আকাশে পত পত করে উড়তে থাকে বাংলাদেশের পতাকা।

শেষ কথা : এক সাগর রক্তে পাওয়া এই বাংলাদেশ নামের সাথে এই পতাকার সাথে যার নাম মিশে আছে তিনি আমাদের বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যতদিন বাঙালি থাকবে, এই মানচিত্র থাকবে এদেশের পদ্মা, মেঘনা থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারিত হবে সগৌরবে, কৃতজ্ঞতায়।

বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০

বৈশাখ নিয়ে ছড়া, বৈশাখের কবিতা



বৈশাখের ছড়া
এইচ আর রাসেল


বৈশাখ মানে নতুন ভোরে নতুন আলোর ঝলকানি

বৈশাখ মানে দুঃখ ভুলে অসীম সুখের হাতছানি।

বৈশাখ মানে ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর সুখ

বৈশাখ মানে ঝড়ের রাতে দুরু দুরু বুক\

বৈশাখ মানে মাঠে মাঠে ফুল ফসলের শোভা

বৈশাখ মানে পুব আকাশে রঙিন আলোর আভা\

বৈশাখ মানে বাবার সাথে মেলায় ছুটে যাওয়া

হরেকরকম খেলনা কিনে মিষ্টি মিঠাই খাওয়া\

বৈশাখ মানে ব্যবসায়ীদের বাকির হিসাব বন্ধ

হালখাতারই মিষ্টি মুখে ঘুচে যায় সব দ্ব›দ্ব\

বৈশাখ মানে গানে গানে নববর্ষ বরণ

যুগে যুগে নব সাজে ঐতিহ্যকে ধারণ\

বৈশাখ মানে সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্যের চিত্র

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সবার মিত্র\

রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০

কী বিভৎস আমাদের মানবতা! (কোথায় যাচ্ছি আমরা? মানুষের মধ্যে বিবেক)



কী বিভৎস আমাদের মানবতা!

-এইচ আর রাসেল

প্রাণ আছে বলে আমি একজন প্রাণী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেমন সন্দেহ নেই বনের বাঘ, বানর, শিয়াল কিংবা গৃহপালিত গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগির ক্ষেত্রেও। তারা প্রাণী হয়েই জন্মে প্রাণী হয়েই মৃত্যুবরণ করে। তাদের আর মানুষ হওয়ার সুযোগ নেই। তার প্রয়োজনও নেই। কিন্তু প্রাণী হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও মানবপ্রাণীগুলোর মানুষ হওয়ার সুযোগ আছে। আর এর প্রয়োজনটাই মুখ্য। মানুষের মধ্যে বিবেক নামক একটি অদৃশ্য অথচ প্রচন্ড শক্তিশালী একটা বিষয় আছে। যাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ শুধু প্রাণী থেকে বিবেকবোধ বা মানবতাবোধসম্পন্ন একজন মানুষ হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো এ পৃথিবীতে আমরা মানবপ্রাণীগুলোর অধিকাংশই মৃত্যু অবধি শুধু প্রাণীই থেকে যাই মানুষ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারি না। অবশ্য প্রাণীতে প্রাণীতেও তফাত আছে। নিরীহ প্রাণীগুলো প্রাণী হয়েও সমাজের অনেক উপকারে আসে। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি তেমন। আবার শুকর কিংবা হায়েনার মতো প্রাণীও আছে যাদের হিংস্রতায় অন্যান্য প্রাণীগুলো সর্বদাই থাকে ভীত সন্ত্রস্ত।

বলতে দ্বিধা নেই আজকের সমাজে শুকর, হায়েনাদের মতো মানবপ্রাণীগুলোর আধিক্যই যেন সর্বক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে আজ তাদেরই রাজত্ব। অর্থ, খ্যাতি, যশ, সম্মান আজ যেন তাদেরই প্রাপ্য। বিবেকবোধ, মানবতাবোধ এ শব্দগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সমাজ থেকে, মানুষের অন্তর থেকে। মায়া, মমতা, পারিবারিক বন্ধন,সহমর্মিতা আর প্রেম ভালোবাসার অনুভূতিগলোতে কেমন যেন মরিচা ধরে গেছে। তারই ফলশ্রæতিতে আজ সমাজে অহরহই ঘটে চলেছে পিলে চমকে উঠার মতো ঘটনা! যা শুনলে যা দেখলে নিজেকে মানুষ ভেবে পশুর কাছে লজ্জিত হই!

আজ আমরা এতটা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছি যে এক গজ দূরত্বের পাশের ফ্লাটের প্রতিবেশীর খবর রাখি না। রাস্তায় অন্যায়ভাবে কাউকে মেরে ফেলতে দেখলেও না দেখার ভান করে দ্রæত সটকে পড়ি। কেউ কেউ এ অমানবিক ঘটনা মোবাইলে ধারণ করি, দূরে দাঁড়িয়ে আগ্রহের সাথে অপলক চেয়ে থাকি কেউ কেউ। কিন্তু কেউ এগিয়ে গিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ করি না।

কারণে অকারণেই খুনের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে আজকাল। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক কারণে প্রতিদিনই নৃশংসভাবে খুন হচ্ছে মানুষ। ক্ষমতার লোভ, প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য বিস্তার, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থের ভাগবাটোয়ারা, জমি-জমা নিয়ে বিরোধ, ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাবে পরকিয়াচর্চা, এমনকি সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্ধের মতো নিছক ঘটনায়ও খুন হয়ে যাচ্ছে মানুষ। দিনে দুপুরে জনসম্মুখে কুপিয়ে খুন করা, কিংবা অপহরণ করার পর খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করে ফেলা, কিংবা কোনো বিলের ধারে কিংবা রাস্তার পাশে ফেলে রাখা এ যেন খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গেছে আজকাল।

এদিকে সমাজে ধর্ষণের পরিমাণ বেড়েছে আশংকাজনক হারে। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা উল্টালে কিংবা বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমরা ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার খবরগুলো দেখতে পাই। ৪ বছরের শিশু থেকে শুরু করে চল্লিশোর্ধ্ব নারীরাও ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছেন। গার্মেন্ট কর্মী, ছাত্রী, কর্মজীবি, গৃহবধু,এমনকি প্রতিবন্ধী নারী-শিশু কেউ বাদ যাচ্ছে না এ তালিকা থেকে। অন্যদিকে ধর্ষকের তালিকায় চলে আসছে ভবঘুড়ে কিশোর, ছাত্র, দিনমজুর, ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত, স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসার হুজুর এমনকি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠছে স্বয়ং পিতার বিরুদ্ধেই! কী বিভৎস, কী ভয়ংকর অবস্থায় রয়েছে আমাদের বিবেক, আমাদের মানবতা!


অন্যদিকে নিজের পরকিয়া জীবনকে মসৃণ করতে গিয়ে নিজের সন্তানকে খুন করছেন মা! স্বামীকে খুন করছেন স্ত্রী এবং স্ত্রীকেও খুন করছেন স্বামী! শুধু তাই নয় আজকাল রাস্তায়, ডাস্টবিনে কিংবা হাসপাতালের পাশে ময়লার স্তুপে পাওয়া যায় অবৈধ সম্পর্কের নবজাতক মানব সন্তান! কোথায় যাচ্ছি আমরা? আর কত নীচ হবো আমরা? এদিকে মানবতা ও বিবেক ভূলুন্ঠিত হচ্ছে বিবেকবোধহীন সন্তানের মধ্যেও। যার ফলে দেশে দিন দিন বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা। যে মায়ের বুকের দুধ খেয়ে সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন সে সব অকৃতজ্ঞ সন্তানরা তাদের বৃদ্ধা মায়েদের রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যাচ্ছেন এমন ঘটনার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন।

সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ মানবতা আর বিবেকহীন কর্মের মহোৎসব চলছে। ভেবে দেখুন আপনি আমি রোজ বেঁচে থাকার জন্য যে খাবারগুলো খাই তার মধ্যে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, দুধ, ডিম, সবজি, তরকারি, ফলমূল ইত্যাদি প্রধান। অথচ এসব উপাদানের প্রায় প্রতিটিতেই মেশানো আছে ভেজাল, আছে ফরমালিন নামক বিষ! ফলে দীর্ঘদিন এ ভেজাল আর ফরমালিনযুক্ত খাবার খেয়ে খেয়ে মানুষ হার্ট, কিডনি, লিভার, ব্রেইনের মতো মারাত্মক অঙ্গের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে মরনব্যাধি ক্যান্সারেও। এখানেও একশ্রেণির বিবেকহীন মানবরূপী পশুর নোংরা শিকার সাধারণ মানুষ! বিবেকবোধের বিশাল শূণ্যতা এসব পিশাচদের নরপশুতে পরিণত করেছে।

এখানেই শেষ নয় মানুষ অস্স্থু হওয়ার পর স্্রষ্টার পর যার উপর ভরসা করেন সেই ডাক্তারগণের অনেকেই আজকাল বিবেকবোধ জলাঞ্জলি দিয়ে ব্যবসায়ী ও কসাই হয়ে গেছেন। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে টেস্ট দিয়ে কমিশন নেওয়া, অপারেশনের জন্য আকাশচুম্বি ফি, নিজেদের অযৌক্তিক ফি নিয়ে রোগীকে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়া, অখ্যাত সব কোম্পানির ঔষধ প্রেসক্রাইব করে কমিশন নেওয়া, টাকা ছাড়া রোগী ভর্তি না করানো, লাশ বের হতে না দেওয়া এমনকি মৃত ব্যক্তিকে আইসিইউতে রেখে লক্ষ টাকা বিল আদায়ের মতো ভয়ংকর অভিযোগও পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে। ভাবা যায় কোথায় যাচ্ছি আমরা? কোথায় যাচ্ছে আমাদের মানবতা?

দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। দুঃখজনক হলেও সত্যি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকের বিরুদ্ধেও আছে অমানবিক আচরণের বিস্তর অভিযোগ। ক্ষমতাবান অপরাধীদের মামলা না নেওয়া, সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা, মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, বিশেষ সুবিধা নিয়ে অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়া, মাদক ব্যবসা, থানা হেফাজতে মারধরের পর আসামীর মৃত্যু এমনকি ধর্ষণের মতো অভিযোগও উঠছে তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে!

এমনি করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিবেক আর মানবতার অভাবে ভরসা আর আস্থার জায়গাগুলো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। হিংস্র পশুর সাথে আমাদের পার্থক্যটা দিন দিন কমে যাচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের বিবেককে জাগ্রত না করবো, লোভ, প্রতিহিংসা পরিত্যাগ না করবো, মিথ্যা আর অসুন্দরকে পরিত্যাগ না করবো ততদিন পর্যন্ত আমরা মানুষ না হয়ে শুধুমাত্র প্রাণীই থেকে যাবো। আর মানুষের অবয়ব নিয়ে প্রকৃত মানুষ হয়ে মৃত্যুবরণ না করতে পারলে এ জীবনটা যে কেবলই নিরর্থক হয়ে থাকবে।

বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০

আরও কটা দিন (আরও কিছু দিন,দেখে যেতে চাই)


আরও কটা দিন

- এইচ আর রাসেল



আমি আরও কটা দিন

সঙ্গী হতে চাই

হারিয়ে যাওয়া সোনালী সুখের,

আরও কটা দিন

দেখে যেতে চাই

সরল হাসি কচি মুখের \


শিশির জড়ানো ঘাসের বুকে

হেঁটে যেতে চাই আরও কটা দিন,

সবুজে মোড়ানো গাঁয়ের মাঠে

ফসলের হাসি চির অমলিন \


আমি আরও কিছুদিন

সঙ্গী হতে চাই

কনকনে হাওয়া দারুণ শীতের,

জারি সারি, যাত্রাপালা

আউল-বাউল পল্লীগীতের\


প্রখর রোদের তপ্ত হাওয়ার

সঙ্গী হতে চাই আরও কটা দিন,

বটের ছায়ার নিবিড় মায়ায়

তৃপ্ত হতে চাই আরও কটা দিন।


আরও কিছু দিন

দাও না প্রভু

হৃদয় ভরে তোমায় ডাকার

দাওনা সুযোগ মানবমনে

অনন্তকাল বেঁচে থাকার!

দ্বিরুক্তির ছড়া(দ্বিরুক্ত শব্দ)


দ্বিরুক্তির ছড়া

- এইচ আর রাসেল

[ দ্বিরুক্ত শব্দের অর্থ হলো দুইবার উচ্চারিত হওয়া শব্দ। একবার উচ্চারিত হলে একটি শব্দের যে অর্থ হয় দুইবার উচ্চারিত হলে সেই শব্দের অর্থের পরিবর্তন হয়। যেমন আমার শীত লাগছে। এতে বুঝা যায় আমার পুরোপুরি শীত লাগছে।। কিন্তু যদি বলা হয়, আমার ‘শীত শীত’ লাগছে তখন বোঝা যাবে পুরোপুরি নয় আমার আংশিক শীত লাগছে বা শীতের মতো লাগছে। বাংলা ভাষায় এমন অনেক দ্বিরুক্ত শব্দ রয়েছে। এমনই কিছু দ্বিরুক্ত শব্দ দিয়ে এই কবিতাটি লেখা হয়েছে।]


বাতাসটা বয়ে যায় করে শনশন

মশা মাছি উড়ে যায় করে ভনভন।

পেকে গেলে ফোঁড়াটা করে টনটন

ছেলে বুড়ো কাঁপে দেখ শীতে কনকন।

বাদলের ধারা দেখ ঝরে ঝরঝর

ভয় পেঁয়ে হরিণটা কাঁপে থরথর।

পরে গেলে বাসনটা করে ঝনঝন

মিঞা বাবু হেঁটে যায় করে হনহন।

খুশি হলে যেই চোখ করে ছলছল

অশ্রæতে সেই চোখ করে টলটল।

ঘড়ি দেখ বেজে চলে করে টিকটিক

দূর হতে বালুচর করে চিকচিক।

মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০২০

অযৗক্তিক অধিকার (অধিকার, অনুভূতি)


অযৌক্তিক অধিকার
-এইচ আর রাসেল





কিছু ভালো লাগার কোনো মানে হয় না

কোনো যুক্তি ছাড়াই মাথায় চেপে বসে

কিছু অবাঞ্চিত অনুভূতি!

কিছু স্বপ্ন অজান্তেই বাসা বাঁধে হৃদয়ে

অনধিকার চর্চায় হয়ে ওঠে মরিয়া!

অযৌক্তিক অধিকার প্রত্যাশায়\

কী অদ্ভুত তাই না?

কোনটা করবো আগে (অনেক কিছুই, নতুন সাধ)


কোনটা করব আগে?

-এইচ আর রাসেল


অনেক কিছুই করতে পারি

কোনটি করবো আগে

এসব ভাবার মাঝেই আবার

নতুন সাধ জাগ্\ে


ভাবছি লেখালেখিই করবো

লোকে বলবে আমায় কবি,

হলেও হয়ে যেতে পারি

নজরুল কিংবা রবী!

পত্রিকা আর ম্যাগাজিনে

ছাপবে আমার ছবি

তাই লেখালেখিই এখন থেকে

একমাত্র হবি\


নাহ! বরং গানবাজনাটাই করি

এতে অনেক বেশি দাম

অর্থ যশ খ্যাতি আর

অনেক বেশি নাম

একটা গান হিট করালেই

হবে কেল্লাফতে

তাই এখন থেকে গানের সাধন

চলবে দিনে রাতে \


নাকি আমি সাংবাদিকই হবো

দিব সত্য সঠিক খবর

আমার লেখায় হবে

যত অনিয়মের কবর

এই পেশাকে জাতির আয়না

বলে অনেক লোকে

তাই পত্রিকাটাই চালিয়ে যাবো

সাহস রেখে বুকে\


অভিনয়টা কিন্তু আবার

নেহায়েৎ মন্দ নয়

টিভি কিংবা চলচ্চিত্রে

যদি সুযোগ হয়

রাতারাতি তারকা আর

খ্যাতি জগৎময়

তাই অভিনয়টাই করব আমি

অন্য কিছু নয় \


একদিন হঠাৎ ঘোমের ঘোরে

স্বপ্নমাঝে দরবেশ এক

মারল ধমক জোড়ে

ব্যাটা তুইতো আস্ত বোকা

বুদ্ধিমান নও মোটে

এত কিছু ভাবলে কি আর

কোনো কিছু জুটে?

হরেক ভাবনা বাদ দিয়ে তুই

একটা কিছু কর

বেঁচে মরে থাকার চাইতে

বাঁচার জন্যে মর।

একটা সময় ছিল (না দেখিলে, বদলে যায় সময়)


বদলে যায় সময়
এইচ আর রাসেল

একটা সময় ছিল

একটু তোমায় না দেখিলে

লাগতো না যে ভালো


একটা দিনের কথা

বন্ধ হতো যদি

দু-চোখ জুড়ে অশ্রæধারা

বইতো নীরবধি।


তোমার চোখের পরে

কেউ রাখতে চাইলে চোখ

ওলট-পালট করতে চাইতাম

স্বর্গ-মর্ত্যলোক।


আজ তুমি অন্য কারও

আমার ক্ষেত্রেও তাই

কেউ কাউকে ভাবার মতো

মোটেও সময় নাই।


জগৎ বুঝি এমনই হয়

দোষতো কারো নয়

জীবন সেতো ঠিকই থাকে

বদলে যায় সময়

সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০

কেন বাংলাকে অবহেলা? ভাষার কবিতা


কেন বাংলাকে অবহেলা?

এইচ আর রাসেল




বাংলার জন্য জীবন দিয়ে বাংলাই যাচ্ছে রসাতলে!


আধুনিক হতে সবাই কথায় কথায় ইংলিশ বলে \


মা হয়েছে মম এখb ডেড হয়েছে বাবা

†¯œn মায়া মমতাতেও পড়ল এবার থাবা \


বোনকে বলে সিস আর ব্রো নাকি ভাই


সন্তান †m‡Zv বেবি এখন দরদ সেথায় নাই \


অফিস কিংবা আদালতে কিংবা যথা তথায়


কজন বলো বাংলায় বলে কিংবা লেখে খাতায়?


রাস্তায় যত বিজ্ঞাপন আর প্রচারপত্র লেখা


অধিক যে তার ইংরেজিতে বাংলা’র নেইতো দেখা \


যদিও কিঞ্চিৎ পাই তাতে শুদ্ধ বাংলা কই?


বানান ভুলের উৎসব দেখে অবাক চেয়ে রই


রক্তে পাওয়া ভাষার কেন এমন অবহেলা

পরকে মূল্য দিতে গিয়ে আপন ছুড়ে ফেলা!

10 ই মহররম মুসলিম ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন (কারবালা,ইয়াজিদ)

১০ই মহররম- মুসলিম ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন

এইচ আর রাসেল
অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনার জন্য মহররম মাসের ১০ তারিখ মুসলিমদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনটিকে ইসলামী পরিভাষায় আশুরা বলা হয়। আরবি হিজরি বছরের ১ম এই মাসে ঘটেছিল ইসলামের ইতিহাসের নানাবিধ ঘটনা যা আজও অ¤øান হয়ে আছে। সর্বশেষ কারবালা প্রান্তরে নবীকরিম (স)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা)এর  নির্মমভাবে শহিদ হওয়ার ঘটনাটির জন্য এই দিনটি মানুষের অন্তরে স্মরণীয় হয়ে আছে। মহানবি হযরত মোহাম্মদ (স)-এর ওফাতের পর ৬১ হিজরির ১০ই মহররম অত্যাচারি শাসক ইয়াজিদ-এর আক্রোশে তারই নির্দেশে হযরত হোসাইন (রা) কে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ইতিহাসের এ জঘন্য হত্যাকান্ডটিকে মুসলিম জাতি অত্যন্ত  বেদনাভরে স্মরণ করে। মুসলামানদের জন্য এ মাসের মর্যাদা অপরিসীম। এক সময় এ মাসে রোজা রাখা হতো। কিন্তু রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার পর এ রোজাটি নফলের মর্যাদা পায়। কিন্তু হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী রমজান মাসের ফরজ রোজার পর সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ নফল রোজা হলো এই মহররমের রোজা (জামে তিরমিজি)। এ ব্যাপারে নবি করিম (স) বলেন,‘আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আল্লাহ পাকের নিকট আমি আশাবাদী যে তিনি এক বছর আগের গোনাহ ক্ষমা করে দিবেন (মসনাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ.)। মহররম মাস মুসলিম বিশ্বে এতোটা তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার পেছনে রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা।

১০ই মহররমের কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা :

মহররম মাসেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আ) কে সৃষ্টি করেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই মাসেই। এই মাসেই গন্ধম খাওয়ার অপরাধে আদম (আ) কে বেহেশত হতে বের করে দেওয়া হয়। আবার এ মাসেই আদম (আ) ও বিবি হাওয়াকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এ মাসেই নুহ (আ)-এর প্লাবন বা ঝড় থেকে মুক্তি পেলেন এবং তার জাহাজ তুরস্কের একটি পর্বতে গিয়ে থামল। এ মাসেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত ইব্রাহিম আ. কে জালিম বাদশা নমরুদের নিক্ষিপ্ত অগ্নিকুন্ড থেকে নিরাপদে মুক্ত করলেন। এ মাসেই দীর্ঘ ৪০ দিন পর হযরত ইউনূস (আ) আল্লাহর রহমতে মাছের পেট থেকে মুক্ত হলেন। এ মাসেই হযরত আইয়ুব আ. আঠারো বছর অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগের পর কুষ্ঠ রোগ থেকে মুক্ত হলেন। এ মাসেই নীলনদে দলবলসহ কুখ্যাত ফেরাউনের সলিল সমাধি হয়েছিল আর হযরত মুসা (আ) তার দলবলসহ নিরাপদে নদী পার হয়েছিলেন। হযরত ঈসা (আ)-এর জন্ম হয়েছিল এই মহররম মাসেই এমনকি তাকে আসমানে উঠিয়েও নেওয়া হয় এই মাসেই। এই মাসেই হযরত হযরত ইয়াকুব আ. দীর্ঘ ৪০ বছর পর তার হারানো পুত্র হযরত ইউসুফ (আ) কে খুঁজে পান। এ মাসেই হযরত সোলায়মান আ. ফিরে পেয়েছিলেন তার হারানো রাজত্ব। সর্বশেষ মহরম মাসের ১০ই মহররম হযরত হোসাইন রা.-এর হৃদয়বিদারক পরিণতির কারণে মহররম মাসের তাৎপর্য এতোটা ব্যাপক। বাংলাদেশে যথাযথ ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালিত হয়। যদিও কিছু কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠী বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমের  মাধ্যমে এ দিনটির মর্যাদা ক্ষুণœ করছেন। আল্লাহ সবাইকে মহররম মাসের গুরুত্ব বুঝে আমল করার তৌফিক দিন।

রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০

আল্লাহ নম্রতাকে ভালোবাসেন (নম্রতা) (ভদ্রতা)



আল্লাহ নম্রতাকে ভালোবাসেন

এইচ আর রাসেল : মানবজাতি সৃষ্টির পর আল্লাহ যুগে যুগে বহু নবি রাসূল প্রেরণ করেছেন। তারা তাদের জীবদ্দশায় মানবজাতিকে আল্লাহর নির্দেশিত পথের  সন্ধান দিয়েছেন। তারা মানুষকে শিখিয়েছেন কীভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে হবে। কীভাবে পৃথিবীকে আখিরাতের শস্যক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কীভাবে ইহকাল ও পরকালের শান্তি ভোগ করা যাবে। আল্লাহ তার প্রেরিত নবি রাসূলগণের মাধ্যমে এটাও শিখিয়েছেন কীভাবে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বভাব বজায় রেখে কল্যানের পথে জীবন অতিবাহিত করতে হবে। । সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের আচরণ কেমন হবে, কেমন হবে তার চারিত্রিক গুণাবলি তাও শিখিয়েছেন, যাতে করে মানুষ পথভ্রষ্ট না হয়। তাই ইসলামে সদাচরণ একটি মহৎ গুণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় এই সদাচরণ, সুচরিত্র তথা আখলাকের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বাণী তথা নির্দেশনা রয়েছে। বলা হয়েছে যার আখলাক যত বেশি ভালো আল্লাহর কাছে সে তত বেশি ভালো। পবিত্র আল কুরআনে বলা হয়েছে ... তোমরা মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। আত্মীয়, প্রতিবেশী, নিকটবর্তীজন, পাশর্^বর্তী লোকজন সহচর, মুসাফির এবং তোমার অধীন দাসদাসীসহ সবার প্রতি ইহসান ও ভালো ব্যবহার কর’ –-  সুরা আন নিসা । সুরা আল ফুরকানের এক আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেন ‘ রহমানের (আসল) বান্দা তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মুর্খরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকলে  বলে দেয় তোমাদের সালাম। তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়। ’ শুধু মা বাবা কিংবা আত্মীয় পরিজন নয় সমাজের সব স্তরের মানুষের সাথেই নম্র ও ভদ্র আচরণের নির্দেশ রয়েছে ইসলামে। সুরা বনি ইসরাইলের ২৮ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন ‘ যদি তাদের থেকে ( অভাবী, মিসকিন, আত্মীয়স্বজন ও মুসাফির থেকে) তোমাদের মুখ ফিরিয়ে নিতে হয়  এজন্য যে  তুমি এখন আল্লাহর প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছ(অর্থাৎ তোমার সামর্থ্য নেই) তাহলে তাদের সঙ্গে মধুর ও নরম ব্যবহার কর। অর্থাৎ সাহায্যপ্রার্থী কাউকে যৌক্তিক কারণে ফিরিয়ে দিতে হলেও তাদের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করতে হবে। তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এ কাজটা আমরা এখন  সমাজে অহরহই করে থাকি যা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয় অপরাধ। হাদিস শরীফেও ন¤্র ও ভদ্র আচরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ (স) বলেছেন ‘আল্লাহ স্বয়ং নম্র, তাই তিনি ন¤্রতাকেই ভালোবাসেন। তিনি কঠোরতার জন্য যা দান করেন না তা নম্রতার জন্য দান করেন। নম্রতা ছাড়া অন্য কিছুতেই তা দান করেন না। এটি মা হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের হাদিস। হযরত জারির (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন ‘যার মধ্যে নম্রতা নেই সে প্রকৃত কল্যান থেকেই বঞ্চিত।’ (মুসলিম) । নবি কারিম (স) আরও বলেন ‘নম্রতা যে কোনো বিষয়কেই সৌন্দর্যমন্ডিত করে। আর কারও কাছ থেকে নম্রতা বিদূরিত করা হলে এটা তাকে কলুষিত করে ছাড়ে। ’(মুসলিম)। রাসূল (স) আরও বলেন ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহরই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বিনয় ও নম্রতার নীতি অবলম্বন করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’(মুসলিম) । অর্থাৎ বুঝা গেল, ্ইসলামে নম্রতা ও ভদ্রতার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আসুন আমরা একে অপরের সাথে কথাবার্তা, চলাফেরায়, আচরণে নম্রতা ও ভদ্রতার সর্বোচ্চ প্রদর্শন করি এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের দেখানো পথকে অনুসরণ করি। এতেই মানবজাতির ইহকাল ও পরকালীন মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তৌফিক দিন।

বাড়ছে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা (নারী মাদকসেবী; নারী যখন মাদকাসক্ত)


বাড়ছে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা


এইচ আর রাসেল : সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে মাদকদ্রব্য গ্রহণ, মাদকব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সারা দেশের উপর একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায় প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা। স্কুল কলেজ ভার্সিটি পড়–য়া মেয়েরা এ মাদকের সাথে বেশি জড়িত। উচ্চবিত্ত পরিবারের স্বাধীনচেতা নারী থেকে শুরু করে বস্তির শ্রমজীবি নারীরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে মাদকের সাথে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথের একটি গবেষণা থেকে জানা যায় দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০ লাখ। এর মধ্যে ১০ শতাংশ মাদকাসক্ত হলো নারী। এবং দিন দিন নারী মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ইদানিং রাজধানী ঢাকার কিছু অভিজাত এলাকার সড়কে , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে, ক্যান্টিনে, পার্কে এমনকি ফুটপাতের টঙ দোকানে দাঁড়িয়েও অনেক মেয়েকে ধুমপান করতে দেখা যায়। এছাড়া এদের মধ্যে অনেকেই গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকের সাথে জড়িত। এসব মাদক সেবীর বেশিরভাগই শিক্ষিত এবং স্মার্ট। বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজি চালাতে গিয়ে একরকম ঝোঁকের মধ্যেই তারা জড়িয়ে পড়ছেন মাদকের সাথে। তাছাড়া আড্ডায় বসে অনেকের সাথে নিজে মাদক গ্রহণ না করাটা প্রেস্টিজ ইস্যু মনে করে অনেক মেয়ে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। তবে বস্তি অঞ্চলের নারীরা কিংবা শ্রমজীবি অনেক নারী পাারিবারিক ও পারিপাশির্^ক অভ্যাসের কারণে অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই মাদকাসক্ত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গবেষণায় আরও প্রকাশিত হয় যে সারাদেশের ৮টি জেলার মধ্যে মাদক সরবরাহের দিক থেকে এগিয়ে আছে সিলেট জেলার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বরিশাল জেলার মানুষ। আর সবচেয়ে বেশি মাদক গ্রহণ করেন রাজধানী ঢাকার মানুষ। এছাড়া মোট মাদকাসক্তের ২৫% মাদকসেবী হলো শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের মধ্যে। এবং এদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজধানী ঢাকায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় মাদকসেবীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাদক হচেছ গাঁজা ও ইয়াবা। এর মধ্যে ঢাকার মাদকসেবীরা বেশি গ্রহণ করেন ইয়াবা। বরিশালের মাদকসেবীরা সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করেন গাঁজা। রংপুরের মাদকসেবীরা সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করেন ফেনসিডিল ও রাজশাহীরা মাদকসেবীরা গ্রহণ করেন  হেরোইন। সারা দেশে যে পরিমাণ গাঁজা ও ইয়াবা গ্রহণ করা হয় তার ৬৮.২ শতাংশ গাঁজা ও ৪৮.২ শতাংশ ইয়াবা। জরিপে দেখা যায় বেশিরভাগ মাদকসেবীদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। মাদকের পিছনে তাদের গড় খরচ মাসিক হিসেবে ১৭ হাজার টাকার উপরে। জানা যায় দেশের ভিতরে মাদক আসে সবচেয়ে বেশি পার্শ¦বর্তী দেশ ভারত থেকে। তারপর মায়ানমার থেকে। মাদকসেবীরা সাধারণত খোলা মাঠে, ভাঙ্গা ও পরিত্যাক্ত বাড়িতে, নিজের বাড়িতে কিংবা কোনো নির্জন স্থানে গিয়ে মাদকসেবন করেন। এই মাদক গ্রহণের কারণ একেক জনের কাছে একেক রকম। শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে চাকরি না পাওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি কারণ চিহ্নিত করা যায়। বাংলাদেশী মাদকসেবীরা সাধারণত মাদক গ্রহণের ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত মাদক পুরোদমে চালিয়ে যান। তারপর কিছু সংখ্যাক ছেড়ে দেন এবং কিছু সংখ্যক মাঝে মাঝে এবং কিছু সংখ্যাক পুরোদমেই মাদকগ্রহণে নিয়মিত হয়ে যান। পরিবহণ শ্রমিকদের বেশিরভাগই প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মাদকের সাথে জড়িত।



শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

শিশুরা এ বোঝা আর কতদিন বইবে?



শিশুরা এ বোঝা আর কতদিন বইবে?
 
প্রতীকি ছবি-সংগ্রহ





এইচ আর রাসলে : যখন বলা হয় শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, তখন এ কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। তেমনি করে যখন বলা হয় শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত কর্ণধার। শিশুরাই আগামী দিনের পথপ্রদর্শক তখনও এ কথার বিরোধিতা করবেন এমন লোক নেই। তাহলে জাতির মেরুদন্ড ‘শিক্ষা’ গ্রহণ করতে গিয়ে জাতির ভবিষ্যৎ শিশুদের মেরুদন্ডকে কেন ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে? কেন শিশুর প্রায় সমপরিমাণ ওজনের স্কুল ব্যাগ তুলে দেওয়া হচ্ছে তাদের কোমল কাঁধে? এর জবাব আমরা অনেকেই  জানি ।এর ক্ষতিকর দিকটাও সবার জানা। তারপরেও সকলের চোখের সামনে এই অমানবিক আচরণ চলছে অবলীলায় উৎসবের সাথে! এ দেশের আদালত শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের স্কুলব্যাগ বহন নিষিদ্ধ করে আইন প্রয়োগ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেছে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে সে রুলের আর কোনো সুরাহা আমরা দেখতে পাইনি। ফলে অভিভাবক, শিক্ষক, সুশীল সমাজ, প্রশাসন সকলের সামনে দিয়েই কোমলমতি শিশুরা তাদের ওজনের প্রায় সমপরিমাণ স্কুল ব্যাগ বহন করতে গিয়ে শারীরিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়ছে। তাদের মেরুদন্ডের হাড় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পিঠে, পায়ে ব্যথা সহ্য করছে। শারীরিক দূর্বলতা নিয়ে ধুকে ধুকে বড় হচ্ছে আমাদের আগামী প্রজন্ম।

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের কিন্ডারগার্টেনসহ সরকারি বেসরকারি স্কুলগুলোর দৃশ্য প্রায় একই রকম। কাকডাকা ভোরে ঘুম ঘুম চোখে সামর্থ্যরে বাইরের এক বোঝা বইয়ের ব্যাগ নিয়ে কুাঁজো হয়ে হেঁটে যাচ্ছে সন্তান। পিছনে নিরুপায় অভিভাবক মাঝে মাঝে নিজেই তুলে নিচ্ছেন ব্যাগ সন্তানকে কিছুটা বিশ্রাম দেওয়ার জন্য। স্কুলে যাওয়ার সময় একবার এবং স্কুল ছুটির পর আরেকবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে স্কুল ব্যাগের এই অতিরিক্ত বোঝা বইতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই। তারপর কোচিং ও শিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়া আসার সময়ও এই শ্রম দিতে হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

ঢাকাসহ সারাাদেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়  প্লে, নার্সারি, কেজি শ্রেণির শিশুদের জন্য বাংলা বর্ণ পরিচয়, বাংলা ছড়া, ব্যাকরণ, ইংরেজি বর্ণ পরিচয়, রাইমস, গ্রামার, অ্যাক্টিভ ইংলিশ, ওয়ার্ড বুক, সাধারণ জ্ঞান, ছবি আঁকাসহ ১০ থেকে ১৫টি বই তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়াও তাদের ডায়েরি, খাতা –কলম, পেন্সিল বক্স, পানির ফ্লাক্সতো আছেই। ১ম ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য সরকার নির্ধারিত বাংলা, অংক ও ইংরেজি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হলেও তাদেরও রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির ধরিয়ে দেওয়া প্রায় ১৫টি বই।  তেমিনভাবে ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত ৬টি বইয়ের বাইরে রয়েছে গ্রামার, ব্যাকরণ, নোট-গাইডসহ অন্যান্য বেশ কিছু ভারী ওজনের বই যা বহন করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তারা দিন দিন দূর্বল হয়ে পড়ছে আর পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। খেলাধুলা বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও সময় না পাওয়ায় জীবন হয়ে যাচ্ছে রোবটের মতো অনেকটাই যান্ত্রিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শিশুদের প্রতি কেন এ নির্মমতা? হেসে খেলে যাদের শৈশব পার হওয়ার কথা কুলির মতো কেন তাদের পাহাড়সম বইয়ের বোঝা বইতে হয়? কাদের স্বার্থে এই অনিয়ম? এটা আমরা সবাই জানি। এক শ্রেণির পুস্তক ব্যবসায়ী, প্রশাসনের কিছু সুবিধাবাদী আমলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু লোভী শিক্ষক, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির কিছু বিবেকহীন প্রাণীর স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি এই নির্দয় আচরণ। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে তৈরি হয় বিভিন্ন কোম্পানির বই। তারপর শিক্ষক , সমিতি কিংবা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাথে লিয়াজো করে , ডোনেশনের মাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন উপায়ে সেগুলো পাঠ্য হয় স্কুল,কিন্ডারগার্টেনে। অতঃপর স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের হাতে ধরিয়ে দেন ফরমায়েশি ‘বুক লিস্ট’। সেই বুক লিস্ট ধরে একান্ত অনুগত ছাত্রের মতো বই কিনে নিয়ে আসেন অভিভাবকবৃন্দ। সেক্ষেত্রে দাম যতই হোক তাকে বুক লিস্ট ধরেই বই কিনতে হয়।   কেননা অভিযোগ আছে অন্য বই থেকে উত্তর লিখলে শিক্ষকরা নম্বরও দেন না। এমনি করেই নিজেদের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন, স্বাস্থ্য আর নির্মল শৈশব নিয়ে ছিনিমিনি খেলছি আমরা কতিপয় স্বার্থবাজ।


বাসে এ আচরণগুলো আপনিও করেন কি?


বাসে এ আচরণগুলো আপনিও করেন কি?


এইচ আর রাসেল : আমাদের নিত্যদিনের জীবনযাপনে একটা অপরিহার্য প্রয়োজন হচ্ছে পরিবহন। জীবন জিবিকার তাগিদে আমাদের প্রতিদিনই কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়। সেই কর্মক্ষেত্রটা হতে পারে কারও অফিস, কারও নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। বাসার কাছের স্কুল ছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পরিবহন ব্যবহার করেন। তাছাড়া আত্মাীয় স্বজনের বাসায় , হসপিটাল কিংবা বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করতে আমরা পরিবহনের দ্বারস্থ হই। অর্থাৎ পরিবহন ছাড়া আমাদের জীবনযাপন বিশেষ করে শহুরে জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব।

এই পরিবহনে চলে নানা ধরনের নৈরাজ্য। ভাড়া বেশি নেওয়া, সিটিং গাড়িতে দাঁড়িয়ে লোক নেওয়া, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে লোক উঠানো, ট্রাফিক আইন না মানা, অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালানো ইত্যাদি নানা রকমের অভিযোগ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পুরানো। আর এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়াতে বিস্তর প্রতিবেদন, লেখালেখি, টকশোতে গরম গরম আলোচনা সমালোচনা, মানবন্ধন, মিছিল, সমাবেশ হরহামেশাই হয়।   সে বিষয়গুলো নিয়ে আমি অন্য লেখায় আলোচনা করেছি। কিন্তু আজ আমার আলোচনার বিষয় আমরা যারা পরিবহনের যাত্রী তাদের নিয়ে।

পরিবহনে তথা বাসে আমরা যখন যাতায়াত করি তখন বাসের স্টাফদের সাথে আমাদের দু-চার কথা বিনিময় করতে হয়। আর এই দু-চার কথা বিনিময় করতে গিয়েই আমরা যেন খেই হারিয়ে ফেলি। হঠাৎ করেই যেন আমাদের আচরণে উগ্রতা এসে ভর করে। চলুন মিলিয়ে দেখি আমাদের কার কার মধ্যে এই অভ্যাসগুলো রয়েছে।

আমরা অনেকেই লোকাল বাসে উঠে ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে বলি ঐ ব্যাটা গাড়ি বাড়া। তগো হারা জীবনেও পেট ভরব না ব্যাটা, গাড়ি বারা। কেউ কেউ আবার কিছু খাস বাংলা ব্যবহার করেন...... পোলা গাড়ি বারা ইত্যাদি’। স্বাভাবিকের চেয়ে যাত্রী বেশি উঠালে আমরা কেউ কেউ বলি কি রে ড্রাইভার তোর অয়নাই? আর কি তোর মাতায় লবি নাকি? শালারা তোরা জীবনেও মানুষ হবি না ইত্যাদি। গাড়ি যদি স্বাভাবিকের চাইতে একটু ধীর গতিতে চলে তবে আমরা কেউ কেউ বলি কিরে রিকসা চালাস নাকি? তোর পিছের গাড়ি আগে যায় কেমনে? ব্যাটা গাড়ি থুইয়া রিকসা চালাগা যা ’ইত্যাদি আরও অনেক কিছু। আবার স্বাভাবিক গতির চেয়ে একটু বেশি গতিতে চললে আমরা কেউ কেউ বলি ঐ ব্যাটা গাড়ি কেমনে চালাছ, আস্তে চালা,গাঞ্জা খাইছস নাকি? কেউ কেউ বলি তোরতো জীবনের দাম নাই ব্যাটা আমগো জীবনের দাম আছে, আস্তে চালা ইত্যাদি। কন্ট্রাকটর যখন ভাড়া চাইতে এসে বলে ভাই ভাড়াডা দেনতো কিংবা মামা/স্যার ভাড়াডা লনতো। তখন আমরা দুএকজন বলি পরে ল। দ্বিতীয়বার চাইলে পরে কিছু ঐতিহ্যবাহী বাংলা গালি ঝেড়ে দিয়ে বলি ...কইছিনা পরে ল,থাপর মাইরা কানাপট্রি আওলাইয়া ফালামু ব্যাটা ইত্যাদি। ভাড়া দেওয়ার পরেও যদি ভুল করে কারও কাছে ভাড়া চাওয়া হয় তবে কন্ট্রাকটরের প্রতি তেড়ে গিয়ে বলি ব্যাটা ভাড়া যে নিয়া গেলি খবর নাই। এরই মধ্যে ভুইলা গেছস? যদিও এত মানুষের ভিড়ে এই বিষয়টা মনে রাখা কঠিন। এমনকি আমরা যারা রেগে গেলাম তারা এই দায়িত্বটা পালন করতে গেলেও এই ভুলটা আরও বেশি করতাম। আর অতিরিক্ত ভাড়া সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা হলেতো কথাই নেই। হই হই রই রই করে চড়াও হয়ে যাই অসহায় কন্ট্রাকটরের ওপর। চড়, থাপ্পর, কিল, ঘুষি মেরে ওকে শায়েস্তা করি বীরের মতো।

আরও আছে ভাংতির অভাবে আমরা ভদ্রলোকেরা যখন কম দেই তখন বলি আর ভাংতি নেই যা। কিংবা বলি এক টাকা কম আছেরে মামা ল। কিন্তু একই কারণে কন্ট্রাকটর যখন আপনাকে এক টাকা কম দিতে চাইছেন তখনই আমরা ওর চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে ছাড়ি এভাবে-পুরা টেকা দে ব্যাটা। কম দেস কেন? কম নিমু না কিংবা ঐ ব্যাটা এক টাকা কম দেস কেন? তগো এক টাকা কম দিলে ত লইবার চাস না। কিন্তু এক টাকা কমের জন্য কোনো কন্ট্রাকটর কাউকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে কিংবা দূর্ব্যবহার করেছে এমনটি আমার জানা নেই। বরং কারো কাছে টাকা না থাকলেও তারা যাত্রীকে যথাস্থানে নামিয়ে দিয়েছে এমন অনেক দেখেছি।

বাসে উঠানামা নিয়েও এক ধরনের দ্বৈতনীতি আছে আমাদের মধ্যে। যেমন ধরুন একটি সিটিং গাড়ি যারা দুচারজন দাঁড় করিয়ে লোক নেই। (যদিও এটা অপরাধ) । তারা যখন গেট লাগিয়ে দেয় তখন বাইরে থেকে কিছু যাত্রী উঠার জন্য দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন এবং জানালা দিয়ে কন্ট্রাকটার/ হেলপারকে কিছুটা নরম স্বরে অনুরুধ করেন এভাবে‘ একটু নিয়া যাওনা ভাই, আরে অনেকখন ধইরা গাড়ি পাইনা, দুইএকজন লওনা ভাই। আবার ঘটনাক্রমে একই ব্যক্তি যখন পরের দিন গাড়ির ভিতর থাকেন তখন তিনিই লোক উঠানো নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে পরিবহন স্টাফদের গালিগালাজ করেন। আরও আছে। লোকাল গাড়িতে কিছু লোক উঠেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন তারপর বলেন-এই মিয়া গাড়ি ছাড়ো আর যায়গা নাই। বাইরে থাকা যাত্রী কিংবা কন্ট্রাকটর তাকে পিছনে চাঁপতে বললেও তিনি চাঁপেন না। কিন্তু তিনিই যখন পরের দিন বাইরে থাকেন তখন তিনি খুব কষ্টের সাথে বলেন -শালার প্যাসেঞ্জাররাও খারাপ কম না। পিছে গাড়িডা খালি পইরা রইছে তাও পিছে যায়না। ঐ লোকগুলা চাঁপলেই কিন্তু আরো কয়ডা যাত্রী উঠতে পারতো। এদিকে কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি হয় যে হাজার হাজার মানুষ বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তুু কোনো কারণে গাড়ি নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে কেউ কেউ রিকশা, সিএনজি,ভ্যান কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে অতিরিক্ত খরচ করে গন্তব্যে যান। পরিস্থিতি এমন যে বাড়তি টাকা লাগলেও যে কোনো উপায়ে বাসায় পোঁছানোটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। সেই মুহূর্তে কোনো একটা গাড়ি এসে যদি ৫ টাকা করে ভাড়া বেশি চায় তখন আমরা কেউ তা দিতে চাই না। উল্টো বাসের স্টাফদের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করি। বেশি চাহিদার বিপরীতে যোগান কম থাকলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় এই আর্থিক বিষয়টি অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা মেনে নিলেও এখানে আমরা তা একেবারেই মানতে চাই না। আর এজন্য ওরাও অনেক সময় বাস খালি থাকলেও গেট বন্ধ রেখে বলে- যাব না।

এবার ভিন্নভাবে আপনাকে একটা প্রশ্ন করি । আপনি কি কখনো ভাবতে পারেন আপনি একটি বাসে বসে আছেন আর সেই বাসের কন্ট্রাকটার আপনাকে এসে বলছে ঐ ব্যাটা ভাড়া ল। কি অইল কথা কান দিয়া হান্দায় না? ভাড়া ল ব্যাটা। নিশ্চয়ই এমন কথা আপনি শুনলে সাথে সাথেই তাকে মেরে মাটিতে শুইয়ে দিবেন। আর এটাইতো স্বাভাবিক! আপনি আপনার গন্তব্যে যেতে তার গাড়ি ব্যবহার করছেন বিনিময়ে তাকে অর্থ দিচ্ছেন। আবার বাসের স্টাফ তার জীবিকা নির্বাহের জন্য আপনাকে একটি সার্ভিস দিয়ে টাকা নিচ্ছে। এখানে উভয়ের কাছেই উভয়ের প্রয়োজনটা বড়। তাহলে কেন শুধু একপক্ষ আরেক পক্ষের উপর এভাবে শারীরিক ও মানসিক জুলুম করবে? এখানে সুবিধা নিচ্ছেন দুইপক্ষ। কিন্তু গালিগালাজ সইছেন এক পক্ষ। কিন্তু কেন এই বিভাজন? তারা কি মানুষ নয় ? আজকাল আমরা সমাজের প্রতিষ্ঠিত চোর, বদমায়েশ, চাঁদাবাজদের সালাম দিই। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে ন্যূনতম সম্মানটুকু করতে পারি না। কেন গাড়িতে উঠলেই আমরা এভাবে বদলে যাই? বাসের ঐ হেল্পার, কন্ট্রাকটরটিই যখন অন্য একটি বাসের যাত্রী হয়ে আপনার পাশে বসে তখন আপনি কি তাকে তুই সম্বোধন করে কথা বলতেন। পরিবহন সেক্টরের মানুষগুলোকে একটু সম্মান দিয়ে একটু স্নেহ দিয়ে কথা বললে আমরা কি খুব ছোট হয়ে যাই? নিশ্চয়ই না। দেখুন বাসের কন্ট্রাকটার, হেল্পার, কিংবা ড্রাইভার যে পরিবেশে থাকে, যে সামাজিক আবহের মধ্যে তারা জীবনযাপন করেন, সারাদিন রোদে পুড়ে যে পরিশ্রম তারা করেন, তাদের পারিবারিক অবস্থান, শিক্ষা ও সংস্কৃতির যে শূণ্যতা সেসব কিছু বিবেচনায় আমাদের মানবিকতা, আমাদের আচরণগুলো আর একটু ভদ্রোচিত ও সামাজিক হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

এতক্ষণ আমি যে বিষয়ের দিকে আলোকপাত করলাম তার মূল কথা এই যে আমরা সমাজের তুলনামূলক ভদ্র ও শিক্ষিত দাবিদার কতিপয় বাসের যাত্রীরা প্রায়ই যে অনুচিত,শ্রুতি ও দৃষ্টিকটু আচরণগুলো বাসের মধ্যে করে থাকি তা থেকে আসুন আমরা বিরত হই। শুধু এইটুকু ভাবতে শিখি। এসব হেলপার, কন্ট্রাকটর ও ড্রাইভাররা আমাদেরই ভাই, সন্তান। ওরা এ সমাজেরই মানুষ। ওরা আমাদের থেকে একটু ভালো আচরণ প্রত্যাশা করতেই পারে।

নজরুল ছাড়া এত বিশেষণ আর কাউকে দেয়া যায় কী?



নজরুল ছাড়া এত বিশেষণ আর কাউকে দেওয়া যায় কি?



এইচ আর রাসেল : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন সাহিত্য জগতের নবাব হয়ে বিশ্বের মাঝে ছড়ি ঘুরাচ্ছেন। চারদিকে তার জয়জয়কার। তার সমসাময়িক লেখকেরা কমবেশি তারই ঘরানা অনুসরণ করে লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে কেউ একজন সম্পূর্ণ রবীন্দ্র বৃত্তের বাইরে গিয়ে নরম কোমল সাহিত্য জমিনে যেন বোমা ফাটাতে আরম্ভ করলেন। একের পর এক কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লিখে সবার ঘুম হারাম করার যোগাড় প্রায়। সবার কৌতুহল পাহাড়সমান হয়ে উঠল। কে সেই নবাগত? রবীন্দ্রনাথের একচ্ছত্র রাজত্বে ভাগ বসানোর জন্য ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজিয়ে এগিয়ে আসছে কে? সকলেই খোঁজ খবর করে দেখল একি! এ যে পুঁচকে ছেলের কান্ড! এই রোগামাটা শান্তশিষ্ট বালকের মাথায় সাহিত্যের পোকাটা ঢুকলো কীভাবে? কে সে? কী তার নাম? কীইবা তার পরিচয়? সকলেই তার পরিচয় জানল। তার নাম কাজী নজরুল ইসলাম। কখনো কুসুম কোমল, কখনো বজ্রকঠিন লেখার মাধ্যমে সকলকে তাক লাগিয়ে দেওয়া নজরুল।

নজরুলের কর্মজীবন (বাকশক্তি হারানোর আগ পর্যন্ত) পর্যালোচনা করলে আশ্চর্য না হয়ে উপায় নেই। একজন মানুষের চিন্তায় এত বৈচিত্রতা, এত ভিন্নতা, জীবনকে নিয়ে এত গভীর উপলব্ধি আর কারও লেখনিতে এত প্রকট হয়ে ফুটে উঠেনি। এতো বিশেষণ আর কোনো কবির ভাগ্যে জুটেনি।

ছোটদের জন্য তাঁর রচিত সংকল্প, প্রভাতী, খুকি ও কাঠবিড়ালী, চড়ুই পাখির ছানা, লিচু চোর ইত্যাদি রচনাগুলো পড়লে তাঁকে নিতান্তই শিশুদের কবি ছাড়া ভাবা যায় না। আবার ভাঙ্গার গান, ছাত্রদলের গান, রণসঙ্গীত- চল চল চল, কান্ডারি হুশিয়ার ইত্যাদি অসংখ্য রচনায় তাঁকে তারুণ্যের কবি বললেই যেন সঠিক বলা হয়। আবার যখন তার সাম্যের গান, মানুষ, সাম্যবাদী, কুলি ও মজুর, দারিদ্রসহ এমন আরও অসংখ্য রচনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় তখন আমরা তাঁকে সাম্যের কবি, মানবতার কবি ছাড়া আর কীইবা বলতে পারি? অন্যদিকে তার শিকল ভাঙ্গার গান, প্রলয়োল্লাস, কামাল পাশা, ভাঙ্গার গান, বিদ্রোহী ইত্যাদি খুরধার রচনা পাঠ করে তাকে বিদ্রোহের কবি বলবে না এমন সাধ্য কার?

তিনি শুধু শিশুদের কবি, সাম্যের কবি কিংবা তারুণের কবিই নয়। এমন রক্ত টগবগ করা বিদ্রোহীর মনে প্রেমও যে জেগেছিল! শুধু কি প্রেম? তাঁর মতো এমন গভীর প্রেমানুভূতির প্রকাশ বাংলা সাহিত্যে দেখাতে পেরেছে কজন বলুন! মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী, প্রিয় এমন রাত যেন যায়না বৃথায়, আলগা করোগো খোপার বাঁধন, আধখানা চাঁদ উঠিছে আকাশে আধখানা চাঁদ নিচে ইত্যাদি অসংখ্য প্রেমের গানের জনক যে আমাদের নজরুল! তার মানে তাঁকে আমরা প্রেমের কবিও বলতে পারি অনায়াসেই।

আচ্ছা এবার আসুন নজরুলের ধর্মদর্শনের দিকে। ধর্মদর্শনেও যেন নজরুল অদ্বিতীয়। কারণ ধর্মের গভীরে গিয়ে এর প্রকৃত মর্মবাণী উপলব্ধি করে ধর্মকে সকলের মাঝে নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছে এমন কবির সংখ্যা এদেশেতো বটেই পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। শোন শোন ইয়া ইলাহি আমার মুনাজাত, রোজ হাশরে আল্লাহ আমার করো না বিচার, ত্রিভূবনের প্রিয় মোহাম্মদ, এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল, মোহাম্মদ নাম যতই জপি, খোদা এই গরিবের শোনো শোনো মুনাজাত, ও মন রমজানেরই রোজার শেষে ইত্যাদি অসংখ্যা ইসলামী গানের যে ভান্ডার নজরুল রেখে গেছেন মুসলিম জাতি পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত তা মনে রাখবে। শুধ তার নিজের ধর্মই নয়। অসাম্প্রদায়িক কবি নজরুল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য রেখে গেছেন তার অসংখ্য সৃষ্টি। ওমা তোর চরণে কি, এবার নবীন মন্ত্রে হবে, এলো নন্দের নন্দন নব ঘনশ্যাম সহ অসংখ্য গান রয়েছে তার সৃষ্টকর্মে। তাছাড়া ভজন, কীর্তন, শ্যামা সঙ্গীতের জন্যতো নজরুল হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবতাতুল্য হয়ে আছেন। তাহলে নজরুল তার নিজ ধর্মের প্রতি শতভাগ ভক্তি শ্রদ্ধা অক্ষুন্ন রেখে অন্য ধর্মের জন্যও যে সৃষ্টি রেখে গেছেন আমরা তাকে অসাম্প্রদায়িক কবি বললে বাড়িয়ে বলা হবে কি?

এখানেই শেষ নয় নজরুলের বহুমুখী প্রতিভা। নজরুল ছিলেন একজন বলিষ্ঠ সাংবাদিক। তার সম্পাদনায় ধুমকেতু,দর্পণসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা বৃটিশ সাম্রাজ্যে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। নজরুল ছিলেন একজন পেশাদার গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। ভক্ত ধ্রæব, পাতালপুরী, বিদ্যাপতি, গোরাসহ বেশ কয়েকটি ছবিতে তিনি সুনামের সাথে কাজ করেছেন। শুধু তাই নয় কয়েকটি ছবিতে তিনি নিজ কণ্ঠে গান গাওয়াসহ অভিনয়ও করেছেন। তার রচিত নাটক, উপন্যাস,প্রবন্ধ এমনকি বিভিন্ন সভা সমিতিতে তার প্রদত্ত ভাষণগুলোও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। আর গানের কথাতো বলাই বাহুল্য। গান রচনা, সুরারোপ ও স্বরলিপি প্রয়োগে নজরুলের সমকক্ষ কেবলই রবীন্দ্রনাথ। তবে কোথাও কোথাও তাকেও ছাড়িয়ে গেছেন নজরুল। একই সাথে এত বৈচিত্রময় গান, সুর, তাল, ও নতুন রাগের সৃষ্টি আর কোনো সাধক করে যেতে পারেননি। (কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি।)

এত সংক্ষিপ্ত পরিসরে নজরুলের কাব্য প্রতিভা প্রকাশের সাধ্য কারও নেই। শুধু এইটুকু বলে শেষ করতে চাই-জীবনের প্রতিটা পরতে পরতে দারিদ্রের সাথে, দুঃখের সাথে, যন্ত্রণার সাথে লড়াই করে করে  নজরুল যে বৈচিত্রময় প্রতিভার পরিচয় রেখে গেছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাই আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলেন শিশুদের কবি, তারুণ্যের কবি, বিদ্রোহী কবি, প্রেমের কবি, সাম্যের কবি। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক, অভিনেতা, সুরকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার। সর্বোপরি তিনি বাংলা সাহিত্য জগতে একজন অনন্য অসাধারণ প্রতিভাবান মানুষ।

মসজিদের আদব নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা


gmwR‡`i Av`e wb‡q wKQz ¸iæZ¡c~Y© K_v

GBP Avi iv‡mj : gmwR` n‡”Q Avjøvni Ni| gymjgvb‡`i Bev`‡Zi ¯’vb| gnvb Avjøvni mš‘wói Avkvq Rvgvqv‡Zi mv‡_ mvjvZ Av`vq I Ab¨vb¨ agx©q Bev`Z Kivi Rb¨B gymwjøiv gmwR‡` hvb| Avi ZvB Avjøvni Kv‡Q gmwR` me©v‡cÿv wcÖq ¯’vb| KziAvbyj Kwi‡g Avjøvn e‡jb-Ô .... Avi gmwR`¸‡jv †KejgvÎ Avjøvni Rb¨, Kv‡RB †Zvgiv Avjøvni m‡½ Ab¨ KvD‡K †WK bvÕ| ZvB ïaygvÎ Avjøvni mš‘wói Rb¨B gmwR‡` Mgb Kiv cÖwZwU gymjgv‡bi `vwqZ¡| Avjøvn cweÎ ZvB Zvi Bev`‡Zi NiUvI cweÎ| Avi ZvB cweÎ n‡qB gmwR‡` cÖ‡ek Kivi wbqg| G‡Z i‡q‡Q Acwimxg dwRjZ| ivmyj (m) e‡j‡Qb Ô †h e¨w³ evwo †_‡K cvK cweÎ n‡q A_©vr Ihy K‡i †Kv‡bv diR mvjvZ Av`vq Kivi Rb¨ †nu‡U Avjøvni †Kv‡bv N‡i A_©vr †Kv‡bv gmwR‡` hvq Zvi cÖwZwU c`‡ÿ‡c GKwU cvc S‡i c‡o Ges GKwU K‡i gh©v`v e„w× cvq| ïay ZvB bq | gmwR‡` hvIqvi mgq Zvovû‡ov K‡i †h‡ZI eviY K‡i‡Qb bwe Kwig (m)| wZwb e‡jb Ô hLb †Zvgiv GKvgZ ïb‡Z cv‡e, ZLb mvjv‡Zi w`‡K P‡j Avm‡e| †Zvgv‡`i DwPZ w¯’iZv I Mv¤¢xh© Aej¤^b Kiv| Zvovû‡ov Ki‡e bvÕ| gmwR‡` hvIqvi Rb¨ gbw¯’i Kivi ci gymjøx‡`i DwPZ n‡e ZzjbvgyjK cwi®‹vvi I my›`i †cvkvK cwiavb Kiv| †Kbbv G e¨vcv‡iI Avjøvn Zvqvjvi wb‡`©kbv i‡q‡Q| Avjøvn e‡jb Ô †n Av`g mšÍvb cÖ‡Z¨K mvjv‡Zi mgq †Zvgiv mvRm¾v MÖnY KiÕ| A_©vr gqjv wKsev `„wóKUz †hb †Zb Kvco cwiavb K‡i gmwR‡` cÖ‡ek Kiv hv‡e bv| G e¨vcv‡i ivmyjyjøvn (m) e‡j‡Qb Ô †Zvgv‡`i †KD hLb mvjv‡Z `uvov‡e †m †hb (my›`i) †cvkvK cwiavb K‡i...Õ| Ab¨w`‡K gy‡L `yM©Ü wb‡q gmwR‡` cÖ‡ek bv Kivi e¨vcv‡iI cwi®‹vi †NvlYv Av‡Q Bmjv‡g| Ô †h e¨w³ wcuqvR , imyb ev wcuqvR RvZxq mewR Lv‡e  †m †hb Avgvi gmwR‡`i Kv‡QI bv Av‡mÕ| Zvi gv‡b n‡jv gy‡L `yM©Ü nq Ggb Lvevi †hgb wcuqvR,imyb, ZvgvK,g` wKsev `yM©Ühy³ †Kv‡bv wWªsKm BZ¨vw` †L‡q gmwR‡` hvIqv DwPZ bq| Gevi gmwR‡` wM‡qB `yB ivKvZ ZvwnBqvZzj gmwR` bvgvR cov  mybœvZ| G e¨vcv‡i ivmyjyjøvn (m)-Gi ¯úó wb‡`©kbv i‡q‡Q| wZwb e‡jb Ô‡Zvgv‡`i †KD gmwR‡` cÖ‡ek Ki‡j `yB ivKvZ mvjvZ Av`vq Kivi c~‡e© em‡e bvÕ| ZvQvov `ywbqvwe †Kv‡bv K_v ejv, nviv‡bv †Kv‡bv wKQzi †LuvR Kiv, e¨emv I PvKwi msµvšÍ †Kv‡bv Av‡jvPbv Kiv m¤ú~Y©iƒ‡c wb‡la| bwewR e‡jb Ô†Zvgiv gmwR‡`i wfZ‡i †Kv‡bv †jvK‡K µq-weµq Ki‡Z †`L‡j ej‡e Avjøvn †hb †Zvgv‡`i e¨emvq †Kv‡bv jvf cÖ`vb bv K‡ib...Õ| AviI GKwU e¨vcvi Av‡Q| †Kv‡bv gymjøxi bvgvRiZ Ae¯’vq Ab¨ †Kv‡bv gymjøxi mvg‡b w`‡q hvIqvUvI gvivZ¥K Aciva e‡j wcÖq bwe (m) eY©bv K‡i‡Qb| wZwb e‡jb Ô hw` gymjøxi mvg‡b w`‡q MgbKvix e¨w³i Rvbv _vK‡Zv †h Zvi Dci Kx cv‡ci †evSv †P‡c‡Q, Z‡e Pwjøk ch©šÍ `uvwo‡q _vKv‡KI †m cÖvavb¨ w`ZÕ|
Ggwb K‡i Avjøvn I Zvi ivm~j gmwR‡`i m¤§vb I Av`‡ei K_v e‡j‡Qb| wKš‘ AvRKvj Avgiv gmwR‡`i Av`e A‡bKUv ‡R‡b ï‡bB bó KiwQ| gqjv, Qwehy³, †Quvov I kU© Kvci c‡iB P‡j Avwm gmwR‡`| gmwR‡` e‡mB Av‡jvPbv KiwQ ivR‰bwZK, cvwievwiK, e¨emvwqK Av‡jvPbv| D‰”P¯^‡i K_v ejv, kã K‡i nvmv, gymjøx‡`i mvg‡b w`‡q hvIqv Avmv, GgbwK gmwR‡`i wfZ‡i  †gvevBj wiwmf K‡i K_v ejvi g‡Zv Mwn©Z AcivaI KiwQ Avgiv Aejxjvq| Avmyb Avgiv Avjøvni Ni gmwR`‡K Av`‡ei mv‡_ e¨envi Kwi| gmwR‡`i m¤§vb‡K myD‡”P Zz‡j awi|

আমি ফুটবল বলছি!

Avwg dzUej ejwQ!



GBP Avi iv‡mj : ï‡bwQ Avgvi Rb¥ n‡q‡Q Bsj¨v‡Û| Z‡e Avgvi Rb¥`vZv †K Zv Avgvi Rvbv †bB| R‡b¥i ci †Zvgv‡`i Kv‡Q Avwg †hw`b †R‡bwQ Avgvi bvg dzUej †mw`b Avwg Lye Kó †c‡qwQ| GUv †f‡e, †h Avgvi Rb¥ n‡q‡Q †Zvgv‡`i cv‡q c‡o _vKvi Rb¨| †Zvgv‡`i cv‡qB Avgvi ¯’vb| †Zvgv‡`i cv‡qB Avgvi euvPv giv| ïiæ‡ZB ¯ªóv Avgvi cÖwZ weiæc AvPiY K‡i‡Qb| Avgv‡K evwb‡q‡Qb †MvjvKvi Avi gm„Y K‡i| ZvB wbR B”Qvq Pj‡Z cvwi bv Avwg| †bB K_v ejvi fvlv, †bB cÖwZ‡iva Kivi ÿgZvI| ZvB‡Zv †Zvgv‡`i cv‡qi AZ¨vPvi AwZô n‡qI me gyL ey‡R mn¨ Kwi| c„w_ex‡Z Ggb †jvK †evanq cvIqv KwVb †h Avgv‡K GKwU ev‡ii Rb¨I jvw_ †`qwb| Avgvi ey‡K jvw_ †g‡i †Zvgiv Avb›` cvI, KiZvwj `vI, ev`¨ evRvI, Djøvm Ki|
Avgv‡K m„wó K‡i Avgvi ey‡K cÖ_g jvw_Uv Avgvi ¯ªóvB Avgv‡K w`‡q‡Qb| Zvici †_‡K Avgv‡K wb‡q ˆZwi n‡Z _v‡K bvbv †KŠkj| ˆZwi n‡Z _v‡K Avgvi Dci AZ¨vPv‡ii bxjbKkv| †Zvgiv †evW© ewm‡q wm×všÍ wb‡qQ †gvU 22 Rb 2 `‡j wef³ n‡q Avgv‡K AvNvZ Ki‡e| GKwU wekvj gv‡Vi `yB cÖv‡šÍ Avgvi Rb¨ cvZv nq Rvj| Zvici GKRb cwiPvj‡Ki Z_v †idvwii ZË¡veav‡b ïiæ nq Avgvi Dci AZ¨vPv‡ii Db¥y³ cÖwZ‡hvwMZv| cÖ‡Z¨‡Ki Uv‡M©U cÖwZc‡ÿi Rv‡j Avgv‡K cÖ‡ek Kiv‡bv| wKš‘ Avwg Kv‡iv c‡ÿ bB| Dfq c‡ÿi cv‡qi AZ¨vPv‡i Avwg Gw`K †mw`K QzUvQzwU Ki‡Z _vwK| gv‡S gv‡S Amn¨ hš¿bvq QUdU Ki‡Z Ki‡Z gv‡Vi evB‡i P‡j hvB| wKš‘ iÿv cvBbv| †mLvb †_‡KB Zz‡j G‡b Avgv‡K †_ªv-Bb Kiv‡bv nq| †idvwi mv‡ne eoB b¨vq wePviK| GKRb Av‡iKRb‡K av°v w`‡j wKsev Ab¨vqfv‡e jvw_ w`‡j Zv‡`i kvw¯Íi weavb K‡ib| njy` KvW© †`Lvb cÖ‡qvR‡b jvj KvW© †`wL‡q gvV †_‡K †ei K‡i †`b| wKš‘ Zvi †Pv‡Li mvg‡b 22 Rb wg‡j Avgvq jvw_i ci jvw_ gvi‡Qb Zvi Rb¨ †Kv‡bv kvw¯Íi weavb wKsev †Kv‡bv Kv‡W©i e¨e¯’v †idvwi gnvk‡qi Kv‡Q †bB| GKUv mgq Avgvi wb‡Ri ARv‡šÍB †Kv‡bv GK c‡ÿi Rv‡j Rwo‡q hvB Avwg| Avi ZLbB †Zvgiv jv‡Lv gvbyl †Mvj †Mvj e‡j Avb‡›` wPrKvi K‡i I‡Vv| Avwg †h †Mvj Zv †evanq ZLbB †Zvgiv eyS‡Z cv‡iv|  †L‡jvqo‡`i †KD †KD Avevi †Mvj nRg Kivi K‡ó Avgv‡KB Zxeª N„Yvq m‡Rv‡i jvw_ gv‡i| †hb Zvi G †Mvj nRg Kivi Rb¨ AvwgB `vqx! weRqx `‡ji `yGKRb †L‡jvqvo Aek¨ gv‡S gv‡S Avgvq nv‡Z wb‡q Lywk‡Z Pz¤^b K‡i| Avwg ZLb †Pv‡Li R‡j mvšÍ¡bvi myL LyuwR| Gw`‡K †Ljv †k‡l cyi®‹v‡ii KvcUv wb‡q ˆn ûyjø‡i †g‡Z _v‡K weRqx `j| Pz¤^‡bi ci Pz¤^b w`‡q Kv‡ci cÖwZ Zv‡`i fv‡jvevmv cÖKvk K‡i| wKš‘ hv‡K w`‡q GB Kvc AR©b, †mB Avwg dzUej c‡o _vwK gv‡Vi GK †KvYvq Ae‡njvq, Abv`‡i|  †Zvgv‡`i RvZxq Kwe KvRx bRiæ‡ji fvlvq Ô MxZ †k‡l exYv c‡o _v‡K aywj gv‡SÕ| AK…Z‡Ái g‡Zv †Zvgiv Avgvq fz‡j hvI| A_P AvwgB †Zvgv‡`i Rb¨ e‡q Avwb m¤§vb Avi †MŠie | DPuy Kwi †`‡ki gv_v| AvwgB ˆZwi Kwi †c‡j, g¨viv‡Wvbv, wR`vb, e¨vKn¨vg, †gwm, †ivbvj‡`vi g‡Zv ZviKv| mvivwek^ Zv‡`i gv_vq K‡i bvP‡jI Avwg ‡_‡K hvB cv‡qi wb‡PB| A‡bK bvixf³‡K Zv‡`i wcÖq ZviKvi Qwe ey‡K wb‡q Nygv‡Z †`‡LwQ wKš‘ Avgvq Zviv Qzu‡qI †`‡Lwb KL‡bv| GB‡Zv †mw`b gv‡V Abykxjb KiwQ‡jb GK ZviKv †L‡jvqvo| GK bvixf³ wmwKDwiwU †f` K‡i †`Š‡o G‡m †mB †L‡jvqvo‡K Avb‡›` Rvc‡U ai‡jb| KB Avwg‡Zv cv‡kB wQjvg GKevi †Pv‡Li †`LvI †`‡Lwb Avgvq|
‡m hvB †nvK| GZ wKQzi ciI Avwg Avgv‡K wb‡q myLx| Avwg Mwe©Z| †Kb Rv‡bv? Avwg mvivwe‡k^i gvbyl‡K GK myZvq Muv_‡Z cvwi| Avwg `~i K‡i w`B gvby‡l gvby‡l ag© - e‡Y©i †f`v‡f`| Avwg †L‡jvqvomn mKj gvbyl‡K wkÿv w`B k„•Ljv‡eva, wkóvPvi, cvi¯úwiK wek^vm, mgš^qgyjK m¤úK©| wek^Kvc G‡j mviv c„w_ex †g‡Z _v‡K Avgv‡K wb‡q| mviv c„w_exi †KvwU †KvwU DrmyK †PvL Avgvi Dci AvQ‡o c‡i| Avgvi g‡Zv GK ÿz`ª dzUe‡ji Rb¨ Gi †P‡q M‡e©i Avi Gi †P‡q cÖvwßi Avi Kx n‡Z cv‡i! ZvB Avgvi †Kv‡bv `ytL †bB, Kó †bB| ïay †Zvgv‡`i Kv‡Q Aby‡iva †Zvgiv mvivRxeb Avgv‡K †Zvgv‡`i cv‡qi Zjvq †iL| Avgv‡K fv‡jv‡em| †`‡k †`‡k A‡nZzK hy×, gviYv‡¯¿i cÖwZ‡hvwMZv eÜ K‡i †Zvgiv Avgv‡K PP©v K‡iv| Avwg dzUej c„w_ex aŸs‡mi c~e© ch©šÍ †Zvgv‡`i Kv‡Q _vK‡Z PvB|